গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
গাইবান্ধার সাঘাটায় থানা চত্বরে ইসলামী ছাত্র শিবিরের এক নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে আলোচিত মামলায় সাঘাটা থানার উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রাকিবুল ইসলামকে গাইবান্ধা পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিদ্রোহ কুমার কুন্ডু। তিনি জানান, ঘটনার রহস্য উদঘাটনে রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি ও গাইবান্ধা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশের প্রাথমিক তথ্যমতে, গত ২৪ জুলাই (বৃহস্পতিবার) বিকেলে সাঘাটা উপজেলার গিদারী ইউনিয়নের কলেজ ছাত্র ও শিবির সভাপতি সিজু মিয়াকে থানায় ডেকে নিয়ে যান এএসআই রাকিবুল। সিজুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
এর কয়েক ঘণ্টা পর, রাত পৌনে দশটার দিকে ফোন ফেরত না পেয়ে সিজু থানায় প্রবেশ করে এএসআই রাকিবের ওপর হামলার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ সময় অপর এক পুলিশ কর্মকর্তা এএসআই মহসিন বাধা দিলে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে সিজু থানা থেকে বেরিয়ে থানার সামনের পুকুরে ঝাঁপ দেন।
পরদিন সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে থানার সামনে কচুরিপানায় ঢাকা পুকুর থেকে অজ্ঞাত অবস্থায় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। পরে শনাক্ত হয়, তিনি সিজু মিয়া।
ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পর, শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে—যেখানে পুলিশ সদস্যদের হাতে সিজুকে পিটিয়ে হত্যার চিত্র দেখা যায় বলে দাবি স্থানীয়দের। বিষয়টি নিয়ে তীব্র জনমনে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
ওইদিনই বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী গাইবান্ধা পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘেরাও করে। পরদিন সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে সচেতন নাগরিক সমাজ।
ঘটনার পর প্রশাসনের টনক নড়ে। গঠন করা হয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। এতে সভাপতির দায়িত্বে আছেন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, অতিরিক্ত ডিআইজি, রংপুর রেঞ্জ। অপর সদস্যদ্বয় হলেন মোছাঃ রুনা লায়না, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট), ডিআইজি রংপুর রেঞ্জ এবং মোঃ শরিফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, গাইবান্ধা।
তদন্ত চলমান থাকলেও এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন